এটা কার জন্য উপযোগী?
প্রতিবন্ধী ব্যক্তি. তাদের অভিভাবক, শিক্ষক ও পরিচর্যাকারী।
এই রিসোর্সটি মূলত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন সম্পর্কে তথ্য দিয়ে থাকে।
কেন এই আইন?
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সমঅধিকার, মানবসত্ত্বার মর্যাদা, মৌলিক মানবাধিকার ও সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ৯ অক্টোবর, ২০১৩ ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩’ প্রণয়ন করে। এই আইনে ৪৪টি ধারা ও ১৬টি তফসিল রয়েছে।
এই আইনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
ধারা ২ এর ৯-এ প্রতিবন্ধীতার সংজ্ঞায় যা বলা হয়েছে-
“প্রতিবন্ধিতা” অর্থ যেকোন কারণে ঘটিত দীর্ঘমেয়াদী বা স্থায়ীভাবে কোন ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিগত, বিকাশগত বা ইন্দ্রিয়গত ক্ষতিগ্রস্ততা বা প্রতিকূলতা এবং উক্ত ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিগত ও পরিবেশগত বাধার পারস্পরিক প্রভাব, যাহার কারণে উক্ত ব্যক্তি সমতার ভিত্তিতে সমাজে পূর্ণ ও কার্যকর অংশগ্রহণে বাধাপ্রাপ্ত হন।
ধারা-৩ এ ১১ ধরনের প্রতিবন্ধী ও অন্যান্য প্রতিবন্ধী মানুষের কথা বলা হয়েছে –
- অটিজম বা অটিজমস্পেকট্রাম
- শারীরিক প্রতিবন্ধিতা
- মানসিক অসুস্থতাজনিত প্রতিবন্ধিতা
- দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা
- বাক প্রতিবন্ধিতা
- বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা
- শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা
- শ্রবণদৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা
- সেরিব্রাল পালসি
- ডাউন সিনড্রোম
- বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতা এবং
- অন্যান্য প্রতিবন্ধিতা
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ২০টি অধিকারের কথা ধারা-১৬ এর (ক-ণ) পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়েছে। অধিকারসমূহ হলো:
- পূর্ণমাত্রায় বাঁচিয়া থাকা ও বিকশিত হওয়া;
- সর্বক্ষেত্রে সমান আইনী স্বীকৃতি এবং বিচারগম্যতা;
- উত্তরাধিকারপ্রাপ্তি;
- স্বাধীন অভিব্যক্তি ও মত প্রকাশ এবং তথ্যপ্রাপ্তি;
- মাতা-পিতা, বৈধ বা আইনগত অভিভাবক, সন্তান বা পরিবারের সহিত সমাজে বসবাস, বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন ও পরিবার গঠন;
- প্রবেশগম্যতা;
- সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে, প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী, পূর্ণ ও কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ;
- শিক্ষার সকল স্তরে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তি সাপেক্ষে, একীভূত বা সমন্বিত শিক্ষায় অংশগ্রহণ;
- সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মে নিযুক্তি;
- কর্মজীবনে প্রতিবন্ধিতার শিকার ব্যক্তি কর্মে নিয়োজিত থাকিবার, অন্যথায়, যথাযথ পুনর্বাসন বা ক্ষতিপুরণপ্রাপ্তি;
- নিপীড়ন হইতে সুরক্ষা এবং নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের প্রাপ্যতা সাপেক্ষে, সর্বাধিক মানের স্বাস্থ্যসেবাপ্রাপ্তি;
- শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রসহ প্রযোজ্য সকল ক্ষেত্রে ‘প্রয়োজনীয় স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য উপযোগী পরিবেশ ও ন্যায্য সুযোগ সুবিধা’ প্রাপ্তি
- শারীরিক, মানসিক ও কারিগরী সক্ষমতা অর্জন করিয়া সমাজ জীবনের সকল ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে একীভূত হইবার লক্ষ্যে সহায়কসেবা ও পুনর্বাসন সুবিধাপ্রাপ্তি;
- মাতা-পিতা বা পরিবারের উপর নির্ভরশীল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি মাতা- পিতা বা পরিবার হইতে বিচ্ছিন্ন হইলে বা তাহার আবাসন ও ভরণ-পোষণের যথাযথ সংস্থান না হইলে, যথাসম্ভব, নিরাপদ আবাসন ও পুনর্বাসন;
- সংস্কৃতি, বিনোদন, পর্যটন, অবকাশ ও ক্রীড়া কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ;
- শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও বাক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী, যথাসম্ভব, বাংলা ইশারা ভাষাকে প্রথম ভাষা হিসাবে গ্রহণ;
- ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা;
এই আইনের অধীন ৫টি কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে (ধারা ১৭ থেকে ২৫):
- জাতীয় সমন্বয় কমিটি
- জাতীয় নির্বাহী কমিটি
- জেলা কমিটি
- উপজেলা কমিটি এবং
- শহর কমিটি
ধারা-২৮ অনুযায়ী, ৫টি কমিটি তাদের কাজের সুবিধার্থে প্রয়োজনে উপ-কমিটি গঠন করতে পারবে।
এছাড়াও সরকার প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষা করার জন্য নিম্নের কতিপয় বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করেছে:
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদান (ধারা-৩১)
- গণপরিবহনে আসন সংরক্ষণ, ইত্যাদি (ধারা-৩২)
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ভর্তি সংক্রান্ত বৈষম্যের প্রতিকার (ধারা-৩৩)
- গণস্থাপনায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতকরণ (ধারা-৩৪)
- প্রতিবন্ধিতার কারণে কর্মে নিযুক্ত না করা ইত্যাদি (ধারা- ৩৫)
- বৈষম্য নিষিদ্ধকরণ ও ক্ষতিপূরণ প্রদান (ধারা-৩৬)
- অপরাধ ও দণ্ড (ধারা-৩৭)
- মামলা দায়ের, আমলযোগ্যতা, ইত্যাদি (ধারা-৩৮)
- ফৌজদারী কার্যবিধির প্রয়োগ (ধারা-৩৯)
- কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন (ধারা-৪০)
তফসিল
১৬টি তফসিল রয়েছে-
- শনাক্তকরণ;
- অবধায়ন ও পরিকল্পনা;
- স্বাস্থ্যসেবা;
- ভাষা ও যোগাযোগ
- প্রবেশগম্যতা’
- তথ্য বিনিময় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি;
- চলন;
- সহায়ক সেবা ও পুনর্বাসন;
- শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ;
- কর্মসংস্থান;
- সামাজিক নিরাপত্তা;
- নির্যাতন হইতে মুক্তি,
- বিচারগম্যতা ও আইনী সহায়তা;
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঝুঁকিপূর্ণ ও জরুরী মানবিক অবস্থা;
- ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও বিনোদন;
- সচেতনতা এবং
ডাউনলোড
- প্রিন্ট ভার্শন : পিডিএফ