এটা কার জন্য উপযোগী?
প্রতিবন্ধী ও অপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি, শ্রবণদৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তাদের অভিভাবক, পরিচর্যাকারী, শিক্ষক- শিক্ষার্থী।
মানব ইতিহাসে এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা তাঁদের সীমাবদ্ধতাকে শক্তিতে রূপান্তর করেছেন।
হেলেন কেলার – তাঁদের একজন। এই রিসোর্সে মূলত শ্রবণদৃষ্টি প্রতিবন্ধিতাকে পাশ কাটিয়ে হেলেন কেলারের হেলেন হয়ে উঠার গল্প বর্ণনা করা হয়েছে।
হেলেন কেলার ভিডিওর জন্য প্রতিলিপি
অনস্ক্রিন: ‘উই ফাউন্ড দ্যাট শী কোড ফিল দ্য ভাইব্রেশন অব স্পোকেন ওয়ার্ড’ (We found that she could feel the vibration of spoken words)
উপস্থাপক: মানব ইতিহাসে এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা তাঁদের সীমাবদ্ধতাকে রূপান্তর করেছেন শক্তিতে । হেলেন কেলার – তাঁদের একজন।
১৮৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যে জন্ম হেলেনের। মাত্র ১৯ মাস বয়সে এক ভয়ানক জ্বরে তাঁর দৃষ্টি ও শ্রবণশক্তি হারিয়ে যায়। তাঁর পৃথিবী পরিণত হয় এক অন্ধকার ও নিঃশব্দ বন্দিশালায় ।
শিশুকালেই হেলেন হয়ে উঠেছিলেন অস্থির ও হতাশাগ্রস্ত। তবে আশা হারাননি তাঁর মা । ডাকলেন শিক্ষক অ্যান সালিভানকে। অ্যান সালিভানের আগমন হেলেনের জীবনে যেন এক নতুন সূর্যোদয়। হাতে পানি ঢেলে ‘W-A-T-E-R’ বানান শেখানোর সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত হেলেনের জীবনকে বদলে দেয় ।
অনস্ক্রিন: ‘ডব্লিউ-অ্যা-টি-ই-আর, ওয়াটার, ইট হ্যাজ অ্যা নেম’ (W-a-t-e-r, It has a name)
উপস্থাপক: এই মুহূর্তটি কেবল শিক্ষার সূচনা ছিল না, এটি ছিল হেলেনের আত্ম-অন্বেষণের এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। সেদিন, পানি আর বর্ণমালার মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে, হেলেন উপলব্ধি করলেন যে, প্রতিটি জিনিসের নাম আছে এবং এই পৃথিবীকে বোঝা সম্ভব।
হেলেন শুধু শিখলেন না, তিনি লড়াই করলেন। ব্রেইল, স্পর্শ ভাষা, ওষ্ঠ পঠনের মাধ্যমে তিনি জ্ঞান অর্জন করতে থাকেন। ১৯০৪ সালে প্রথম শ্রবণদৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসেবে হেলেন কেলার স্নাতক সম্পন্ন করেন। তিনি হয়ে ওঠেন একাধারে লেখক, বক্তা ও অধিকারকর্মী।
হেলেনের ‘দ্য স্টোরি অব মাই লাইফ’ (The Story of My Life) – আত্মজীবনী, লাখো মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। বিশ্বজুড়ে প্রতিবন্ধী অধিকার নিয়ে কাজ করেছেন হেলেন। তাঁর লড়াই ছিল সব সীমাবদ্ধতার বিরুদ্ধে, আত্মমর্যাদা ও সমঅধিকারের পক্ষে। তিনি প্রমাণ করেছেন শারীরিক সীমাবদ্ধতা কখনো মন ও আত্মার উত্থান ঠেকাতে পারে না।
তাঁর অসাধারণ জীবনযাত্রা ও সামাজিক কাজকে সম্মান জানাতে প্রতিবছর জুন মাসের শেষ সপ্তাহটি ’Helen Keller Week’ হিসেবে উদযাপন করা হয়। বিশেষ করে ২৭ জুন, হেলেন কেলারের জন্মদিনকে কেন্দ্র করে এই পুরো সপ্তাহজুড়ে নানা ধরনের সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হেলেন কেলারের জন্মদিনকে আরও তাৎপর্যময় করে তোলে । গত ১৬ জুন, ২০২৫ জাতিসংঘ প্রতি বছর ২৭ জুনকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক শ্রবণদৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা দিবস (International Day of Deafblindness) হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেয় । এ ঘোষণা বিশ্বব্যাপী শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি হারানো ব্যক্তিদের জন্য একটি বড় অর্জন, যা তাঁদের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।
আন্তর্জাতিক শ্রবণদৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা দিবস, শ্রবণদৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কণ্ঠকে আরও উঁচুতে তুলে ধরার একটি সুযোগ, যাতে তাঁদের প্রয়োজন, স্বপ্ন এবং সম্ভাবনা সকলের সামনে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠে।